প্রতিনিধি, রাজবাড়ী: লকডাউন শিথিল হওয়ায় চলছে গণপরিবহন। একই সঙ্গে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক চলালচলের কারণে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এছাড়া পদ্মার তীব্র স্রোতে বিঘিœত হচ্ছে ফেরি চলাচল।
সবমিলে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তে সৃষ্টি হয়ছে পণ্য, পশু ও যাত্রীবাহী যানবাহনের দীর্ঘ সারি। প্রচণ্ড রোদ আর গরমে আটকে থাকা যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি ট্রাকে থাকা গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গছে, দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে স্বরূপে ফিরেছে দৌলতদিয়া ঘাট। এতদিন ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় মহাসড়কে যানবাহন দেখা না গেলেও লকডাউন শিথিলের প্রথম দিন থেকে দৌলতদিয়া ঘাট তার চিরচেনা রূপে ফিরে এসেছে। প্রতিটি যানবাহনকে ফেরি পারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। সকাল ১০টা নাগাদ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন বোর্ড পর্যন্ত প্রায় তিন
কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৩০০ পশুবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের দীর্ঘ জট দেখা গেছে।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। এছাড়া দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজট এড়াতে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত তিন কিলোমটিার এলাকায় ২০০ অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে, যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাতে সিরিয়াল অনুযায়ী পার করা হবে বলে জানা গেছে।
আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমে কোরবানী উপলক্ষে ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় ট্রাকে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া গরুগুলো নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা। রোদ ও গরমে অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা তাদের ভরসা হাতপাখা। প্রতিটি ট্রাকে আট থেকে ১০ জন করে রাখাল অবিরাম গরুগুলোকে বাতাস করছেন।
বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক আলিম সরদার জানান, ভোররাতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফেরির নাগাল পাইনি। সিরিয়ালে আছি। প্রচণ্ড গরমে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছেন। ঘাটে পশুবাহী ট্রাক থাকায় বাড়তি চাপ রয়েছে। ফেরির সংখ্যা বাড়লে এই চাপ আর থাকবে না।
সুলতানাপুর থেকে ট্রাকে গরু নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন মোহাম্মদ আলী শেখ। তিনি জানান, ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। এখন দৌলতদিয়া ঘাটে এসে আটকে রয়েছি। এ তীব্র গরমে গরুর স্ট্রোক করতে পারে। তাই একটু চিন্তাই আছি ঠিক মতো গরু নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারব কিনা। কখন ফেরির নাগাল পাবÑতা বলতে পারছি না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদুল আজহা উপলেক্ষ দু’এক দিনের মধ্যে আরও দুটি রোরো ফেরি এ নৌরুটের বহরে যুক্ত হবে। এছাড়া ৩ নং ফেরিঘাটটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রেখে মেরামত করা হচ্ছে।
