পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের গৃহবধু আশা হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে শত শত গ্রামবাসী বুধবার দুপুরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেছে। বিক্ষোভকারীরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ দাবী করেছেন।
মানববন্ধনে বিক্ষোভকারীরা বলেন, গোপালনগর গ্রামের আশা খাতুনের ৪ বছর আগে পার্শ্ববর্তী গোলকাটা গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছফর আলীর সাথে বিয়ে হয়। সম্প্রতি শ্বশুর বাড়িতে থাকা অবস্থায় ননদের স্বামী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে জা আঙ্গুরি ও জাহানারা খাতুনের পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে পরিকল্পিত ভাবে আশা খাতুনকে মারপিট করে জোড়পূর্বক মুখে বিষ ঢেলে দেয় তারা। খবর পেয়ে আশার বাবার বাড়ির লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
নিহত গৃহবধূ আশার পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে উল্টো আশার বাবার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। পরে জামিনে বের হয়ে গত ২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) আশার বাবা জাহিদুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে পাবনার আমলি আদালতে ৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মুরাদ জাহান মামলা আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য ফরিদপুর থানায় পাঠালেও পুলিশ মামলাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। আশা হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের জন্যে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গ্রামবাসী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অনুরোধ করলেও তোয়াক্কা করেন নাই। বক্তারা বলেন যে থানা পুলিশ নিহত আশার বাবার মামলা গ্রহন না করায় আদালতের স্মরণাপন্ন গৃহবধুর বাবা। অথচ আদালত সেই থানাকেই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ায় আমরা বিস্মিত হচ্ছি।
এদিকে বিক্ষুব্ধরা অবিলম্বে ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদের অপসারণ এবং আশা হত্যার বিচার দাবী করেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন, ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফুল কবীর, বনওয়ারী নগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা আজহার আলী সরকার, উপজেলা শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক জনাব আলী সরকার, বনওয়ারী নগর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি শাহাদত হোসেন খান এবং সাধারণ সম্পাদক আকরামুল আলম খান প্রমুখ।
এ বিষেয় ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়। আশা নামের ওই মহিলা বিষপান করলে তাকের রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পর সে মারা যায়। এ ঘটনায় রাজশাহীর সংশ্লিষ্ট থানাতে ইউডি মামলা হয়েছে। আশার স্বজনেরা একটি হত্যা মামলা দায়ের করতে থানাতে এসেছিল। কিন্তু মামলাটি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
কামাল সিদ্দিকী, পাবনা।
