ক্যাসিনো-জুয়া বন্ধে র্যাবের অভিযানকে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ উল্লেখ করে বিএনপির কাছ থেকে অভিনন্দন প্রত্যাশা করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার বিএনপি নেতাদের নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন।চলমান অভিযান নিয়ে শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, অভিযানে প্রমাণ হয়েছে সরকারের মদদে দুর্নীতি হচ্ছে। ধর্মের কল আপনা-আপনি বাজে।
ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির আমলে তো দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। হাওয়া ভবন তৈরি করে সমস্ত ব্যবসা থেকে টেন পারসেন্ট কমিশন নেওয়া হত। সমস্ত ব্যবসার সাথে হাওয়া ভবন এবং তারেক জিয়ার সংশ্লিষ্টতা, বিএনপির বড় বড় মন্ত্রীদের সংশ্লিষ্টতা আমরা দেখেছি। বিএনপির এই অপকর্ম ও দুর্নীতির কারণেই সেই আমলে বাংলাদেশ প্রতিবছর লজ্জাজনকভাবে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারণেই অভিযানগুলো চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে দেশ পরিচালনা করছেন। সেকারণে দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। যে অভিযান চলছে, সেগুলো দেশে বিভিন্নক্ষেত্রে যে অনিয়ম বা দুর্নীতিগুলো হচ্ছে সেগুলোর বিরুদ্ধে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার যে কঠোর অবস্থানে আছে, সেটির বহিঃপ্রকাশ।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া নিজে কালো টাকা সাদা করেছিলেন। অবৈধভাবে অর্জিত টাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের নেত্রী সাদা করেছিলেন জরিমানা দিয়ে। কোকোর দুর্নীতি ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে। তারেক রহমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। দুর্নীতির দায়ে তারেক রহমানের ১০ বছর সাজা হয়েছে। খালেদা জিয়া নিজে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন কি কারণে? এতিমখানা করার জন্য বিদেশ থেকে টাকা এসেছে, সেই টাকা তিনি এতিমখানার অ্যাকাউন্টে না রেখে নিজের অ্যাকাউন্টে রেখেছেন। এ কারণেই তার সাজা হয়েছে।
যে দলের নেতানেত্রীরা দেশকে এমন দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত করেছিল, তারা তো দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার কোনো নৈতিক অধিকারই রাখেন না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব, অভিযান চলছে অনিয়মের বিরুদ্ধে। আপনারা বরং সরকারকে অভিনন্দন জানান এবং নিজেদের অপকর্মের জন্য ক্ষমা চান। বলেন তথ্যমন্ত্রী
এসময় ঢাকা-চট্টগ্রামসহ যেখানেই অনিয়ম পাওয়া যাবে, সেখানেই অভিযান চালানো হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার হাতে-পায়ে ব্যথা এটা উনার অনেক পুরনো শারীরিক সমস্যা। এই সমস্যা নিয়েই উনি দু’বার প্রধানমন্ত্রী এবং দু’বার বিরোধী দলীয় নেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সময়ে সময়ে তাদের পরিবারের সদস্যরা এবং নেতানেত্রীরা এসব সমস্যার কথা তুলে ধরেন শুধু জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য। কারাগারে তার জন্য সার্বক্ষণিক ফিজিওথেরাপিস্ট এবং ডাক্তার ছিলেন। এখন তিনি দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসালয়ে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটি, চট্টগ্রাম নামে একটি সংগঠন প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ৬ জন প্রবীণ নাগরিকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। সংগঠনের সভাপতি দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে এতে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও বক্তব্য রাখেন।
