যেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, তার পরের মুহূর্ত থেকে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করার জন্য চক্রান্তসহ কার্যক্রম শুরু হয় বলে মন্তব্য করেছেন ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রুমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করে তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে ১১ নভেম্বর সমাজতান্ত্রিক স্লোগান দিয়ে জাসদ সৃষ্টি করে মেধাবী তাংণদের বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়া হয়েছিল। জাসদের পেছনে ছিল মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারী জামাতে ইসলাম, শান্তিবাহীনির লোকরা। দেশের মধ্যে সৃষ্টি করা হলো সর্বহারা পার্টি। এভাবেই দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ্’র সভাপতিত্বে ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ডা. এ এস এম তবারক উল্যাহ চৌধুরী বায়েজিদ, ট্রেজারার প্রফেসর তায়বুল হক, রেজিস্ট্রার এ এস এম আবুল খায়ের বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, ফাইনেন্স বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মোস্তফা মামুন হায়াত, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যন কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাশেম, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
১৯৭৪ সালে চক্রান্তের কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের গভীর নোঙ্গরে জাহাজ অপেক্ষা করছে গম নিয়ে। বলা হলো সেন্টমার্টিন দ্বীপকে দিয়ে দিতে হবে আমেরিকার নৌঘাঁটি হিসেবে সেটা প্রতিষ্ঠা করবে। বঙ্গবন্ধু তাতে রাজী হলেন না। তারপর ঐ গভীর নোঙ্গর থেকে চাল গমের জাহাজ ফিরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই দুর্ভিক্ষ অনেক মানুষ মারা গিয়েছে।’
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আগের ২৩ বছর যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষদের জাগিয়ে না তুলতেন তাহলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। স্বাধীনতা কোনো ঘোষণার ব্যাপার না। ৭ মার্চের ভাষনে স্বাধীনতার ঘোষণা সরাসরি দিলে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতা বাদী নেতা বানিয়ে ফেলা হতো এবং স্বাধীনতার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়া হতো। তাই তিনি কৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম- এ দু’টো বলার পর আমরা স্বাধীন বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভারতে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আছে তবে জাতীয় নেতাদের নিয়ে বিতর্ক নেই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই নিজের ইচ্ছায় রাজনীতি করবে, তবে জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতে পারবে না। এই মূল জায়গায় ঐক্যমত না থাকলে আমাদের জাতীয় ঐক্য না থাকবে না।
তিনি বলেন, ৭৫ থেকে ৯৬ সালে স্বাধীনতা দিবস থেকেও স্বাধীনতা শব্দটি মুছে ফেলার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। ২৬ মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে তৎকালীন সরকার। যখন চারদিক থেকে প্রতিবাদ শুরু হলো তখন থেকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। এইভাবেই দেশ নিয়ে পদে পদে চক্রান্ত হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তাই চক্রান্তকারীদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
