জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশের মানুষের সাথে ‘সেরা প্রহসন’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ভিডিও কনফারেন্সে নির্বাচনী গণসংযোগে যে বক্তব্য রেখেছেন তার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতাকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, তাদের (ঐক্যফ্রন্ট) দুর্ব্যবহার থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর হামলা করছে, সহিংসতা চালাচ্ছে। তারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ঝগড়া করেছে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে বাজে ভাষা ব্যবহার করছে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনপির তিনি বলেন, যখন যা মুখে আসছে তাই বলে দিচ্ছেন। গোটা বাংলাদেশ রক্তাক্ত। ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলায় গ্রেপ্তার হচ্ছে, না হয় আতঙ্কে তারা এলাকা ছাড়া হচ্ছে। কত অবলীলায় নির্ভেজালভাবে মিথ্যা কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে দাঁড়িয়ে। বিবেকহীন এবং প্রচন্ডভাবে জবাবদিহিহীন প্রধানমন্ত্রীর কোনো কথা বলতে বাধে না। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশের মানুষের সাথে সেরা প্রহসন।রিজভী বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও তাদের হুকুমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে শত শত ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রক্তাক্ত-ক্ষত-বিক্ষত। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবন্দি। শত শত বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই আচরণ ২৫ মার্চের পাাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।
তখন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও তার দলের নেতারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করছেন। নিজেরা আক্রমণ করে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে নির্যাতিতদের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও জোটের প্রার্থীদের ওপর পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, সব নোংরা অপপ্রচার বন্ধ করুন। যতো নাটকই করুন, আর কোনো লাভ হবে না। প্রতারণা, প্রহসন, মিথ্যাচার করতে করতে সব বিশ্বাস চিরতরে হারিয়ে ফেলেছেন। আপনারা জনগণের চোখে এখন গণশত্রু।সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারে হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।তফসিল ঘোষণার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ৯ হাজার ২০২ গ্রেপ্তার, গায়েবি ও মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৮০৬টি, হামলার ঘটনা দুই হাজার ৭১৬টি, আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৫৮৮ জন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কুদ্দুস, সুকোমল বড়ুয়া, মামুন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আজম খান, বেলাল আহমেদ, শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
