ঢাকার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১২ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ের করা মামলার বিচারকাজ ছয় বছরেও শেষ হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেলোয়ার হোসেনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হওয়ার পর ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকি সাক্ষীরা আদালতে না আসায় মামলাটি স্থবির হয়ে আছে।
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায়ের আদালতে বিচারাধীন।২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।আদালতের সরকারি কৌঁসুলি কাজী শাহানারা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের বলেন, মামলায় সাক্ষীদের হাজির করার জন্য নন-বেইলেভ (অজামিনযোগ্য) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। অধিকাংশ সাক্ষী হলেন তাজরীন ফ্যাশনসের কর্মচারী।
শাহানারা ইয়াসমিন বলেন, সাক্ষীরা ঘটনার সময় ছিলেন ওই এলাকার ভাড়াটিয়া। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যখন তদন্ত করেছেন, তখন তিনি সাক্ষীদের বর্তমান ঠিকানা লিপিবদ্ধ করেছেন। কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা নেননি। যে কারণে বর্তমান ঠিকানায় (সাভারের ঠিকানা) কোনো সমন গেলে পুলিশ তাদের খুঁজে পায় না। এজন্য সাক্ষী আনা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।২০১৫ সালের ১৭ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দাখিল করা অভিযোগ আমলে নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।নথি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন নিহত এবং দুই শতাধিক শ্রমিক আহত হন।
ঘটনার পরের দিন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় নাশকতার পাশাপাশি অবহেলাজনিত মৃত্যুর দণ্ডবিধির ৩০৪(ক) ধারা যুক্ত করা হয়।পরবর্তী সময়ে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক এ কে এম মহসিনুজ্জামান খান তাজরীনের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।অভিযোগপত্রের বাকি আসামিরা হলেন তাজরীন ফ্যাশনসের এমডি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনারুল, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল-আমিন, স্টোর ইনচার্জ আল-আমিন ও লোডার শামীম মিয়া।
