নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) শাহাদাত হেসেন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে কোন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও হলফনামায় তথ্য গোপন করলে এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোন প্রার্থীর হলফনামায় তথ্য গোপনের কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছে এখন পর্যন্ত নেই বলেন তিনি।
রবিবার দুপুরে তিনি গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সমন্বয় কমিটির সভায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ওইসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কেএম আলী আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) খ.ম কবিরুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, জেলা আনসার কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম, র্যাব-১-এর স্পেশালাইজড কোম্পনির কোম্পানি কমান্ডার আব্দুস সালাম প্রমূখ।
নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দেশের প্রতিটি নির্বাচন, সেটা ছোট হোক বা বড় হোক, তা যেন আইনানুগভাবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। তিনি বলেন, বিগত দিনে কুমিল্লা সিটি নির্বাচন হয়েছে আমাদের শপথ গ্রহণ করার পরেই। সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে সর্বশেষ রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও নূন্যতম রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের চাইতে যদি ভাল না-ও হয়, এটলিস্ট তার চেয়ে খারাপ হবেনা। এটা আমরা দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত করে বলতে পারছি। আমাদের সকলেরই সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা থাকবে যেন আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইনানুগ এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠ হয়। যার দিকে এই গাজীপুরবাসী তাকিয়ে আছে।
কমিশনার আরো বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা সমন্বয় কমিটি এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সেল গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এখন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কাজ করছেন। ২৪ এপ্রিল থেকে আরো ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর সঙ্গে যুক্ত হবেন। ১৩ মে ভোটের দুই দিন আগে থেকে আরো ৩৮জন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবে। এ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৫৭জন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সহকারি রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে ১৯টি টিম নির্বাচনী এলাকায় কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ আইনের উপর চলে। কোন প্রার্থী আইনের ব্যত্যয় ঘটালে সেখানে যতটুকু আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন হয় সেটা নেয়া হবে।
তিনি জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম মেশিনের ব্যবহার সম্পর্কে এখনো চুড়ান্ত করা হয়নি। খুব সম্ভবত আমরা একটা বা দুইটা ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করার চেষ্টা করবো। আর সীমিত সংখ্যক কেন্দ্রকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ইচ্ছে আছে। নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রকেই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সোমবার (২৩ এপ্রিল) প্রার্থীতা (মনোনয়নপত্র) প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ২৪ এপ্রিল এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ মে। এবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার ৫লাখ ৬৭হাজার ৮০১। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার পর হতে এটি হবে দ্বিতীয় নির্বাচন।
