মিয়ানমার থেকে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেÑ তারা যেন নিরাপদে দেশে ফিরে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সেজন্য সবার সহযোগিতা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মানবপাচার রোধে সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমনে জাতীয় কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, ‘মানবপাচার একটি আন্তর্জাতিক সমস্যাÑ আমাদের যথাযথ শিক্ষার অভাবসহ বেশকিছু সমস্যা আছে, এগুলো মানবপাচার সম্পূর্ণ বন্ধের পথে অন্তরায়। এটি সমাধানে সরকার সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।দুই দিনব্যাপী ‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৫-২০১৭’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, অবৈধ অভিবাসন মানব পাচারের একটি নমুনা। অবৈধ শ্রম, বাণিজ্যিক পতিতাবৃত্তিসহ অন্য কাজে মানবপাচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার রোধে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের একার পক্ষে মানবপাচার রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য দরকার ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ। মানবপাচার রোধে সরকার, সিভিল সোসাইটি এবং অন্য প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।রোহিঙ্গা ইস্যুতে মন্ত্রী বলেন, ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়াই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা দরকার। মানবপাচার রোধে কর্মপরিকল্পনা তৈরির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা শনাক্ত করা হবে। সরকার সেগুলো নিয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করবে। মানবপাচার প্রতিরোধে এন্টি ট্রাফিকিং অ্যাক্ট-২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সরকার উল্লেখযোগ্য কাজ করে যাচ্ছে।
রাজশাহীতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নমিতা হালদার বলেন, দেড় লাখেরও বেশি গৃহকর্মীকে বৈধ পথে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। এরপরও তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক গৃহকর্মী পাচারের শিকার হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক ও আমেরিকান এনজিও ইউএসএইড-এর মিশন ডিরেক্টর জেনিনা জেরুজেলেস্কি।
