যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে টিউব ট্রেনে বোমা হামলায় জড়িত ১৮ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।শুক্রবার সকালে ঘরে তৈরি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চালানো ওই হামলায় ২৯ জন আহত হয়।১৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির গ্রেপ্তারকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে বর্ণনা করেছে পুলিশ।শনিবার এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের জ্যেষ্ঠ জাতীয় সমন্বয়ক নেইল বাসু বলেছেন, “আজ সকালে এক গুরুত্বপূর্ণ গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তদন্তকে এগিয়ে নিয়েছি আমরা। এই অগ্রগতিতে আমরা সন্তুষ্ট হলেও তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং হুমকির মাত্রা সঙ্কটজনকেই অবস্থান করবে।যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর এলাকা ডোভার থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের পাতাল রেলে চালানো হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ।শুক্রবার সকালে লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে পারসন্স গ্রিন টিউব স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের জনাকীর্ণ একটি বগিতে ঘরে তৈরি একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে, তবে বোমাটি ঠিকমতো বিস্ফোরিত না হওয়ায় অনেকে আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান, জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।এ ঘটনায় ২৯ জন আহত হয়েছেন। বোমাটি বিস্ফোরতি হওয়ার পর আগুন ধরে গেলে অনেকে পুড়ে আহত হন, বাকীরা তাড়াহুড়া করে পালাতে গিয়ে পদদলিত হয়ে আহত হন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী হামলা বলে অভিহিত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে তারা। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লন্ডনের কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজনদের সম্পর্কে কিছু জানায়নি। তবে আরো হামলার আশঙ্কায় লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলার হুমকির মাত্রা ‘সঙ্কটজনক’ পর্যায়ে উন্নিত করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে সরকার।
বিবিসি জানিয়েছে, ঘরে তৈরি ওই বোমাটি একটি বালতিতে রাখা সুপারমার্কেটের পশিং ব্যাগের মধ্যে লুকানো ছিল, তাতে একটি টাইমারও ফিট করা ছিল। এতে বোমা তৈরির কিছু জ্ঞান এতে কাজে লাগানো হয়েছে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস তাদের নিউজ ওয়েবসাইটে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট।তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, গোষ্ঠীটি তাদের সঙ্গে যোগাযোগহীন কিন্তু তাদের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে চালানো হামলাগুলোরও দায় স্বীকার করে থাকে, এমনকি তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নাই এমন হামলার দায়ও স্বীকার করে থাকে।
দায় স্বীকার করলেও নিজেদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি আমাক। তাদের এ দাবির সত্যতা যাচাই করাও অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।ট্রেনের ওই বগিটিতে থাকা ওলা ফায়ানকিন্নু বলেন, পেছন দিক থেকে দ্বিতীয় বগিতে ছিলাম আমি। ‘হুশশ্’ ধরনের একটি শব্দ শুনে পেছনে তাকিয়ে দেখি পুরো বগিতে ধরে যাওয়া আগুন আমার দিকে এগিয়ে আসছে।সামনের পুরো জায়গাটিজুড়ে সেলফোন, ক্যাপ, ব্যাগ ইত্যাদি পড়ে আছে, আবার যখন আমি পেছনে তাকাই আগুন ধরা একটি ব্যগ দেখতে পাই।বস্তুটি বিস্ফোরিত হওয়ার ঠিক আগে ট্রেনে উঠেছিলেন বলে জানান চার্লি ক্রাভেন।বলেন, কামরার দরজা বন্ধ হচ্ছে, আমি আমার ব্যাগটি মাত্র নিচে রেখেছি, এর তিন সেকেন্ডের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পাই আমরা, পাশে তাকে দেখি আগুনের একটা কুন্ডলি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।তিনি জানান, আতঙ্কিত যাত্রীরা দৌঁড়ে পালাতে শুরু করে, দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণ বা বন্দুকধারী ভয় তাড়া করে তাদের, এ সময় অনেকে পড়ে গেলে অন্যরা তাদের পদদলিত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।লন্ডনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এ পযন্ত মোট ২৯ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, এদের অনেকেই আগুনের হল্কায় আহত হয়েছেন।
