ঢাকায় প্রথমবারের মতো দূত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী নভেম্বর মাসে তিনদিন ব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশী কূটনীতিকদের এই সম্মেলনে উপস্থি থাকতে বলা হয়েছে।আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে ওই সম্মেলনে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশ নেন কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুহম্মদ ফারুক খান, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, সোহরাব উদ্দিন, কাজী নাবিল আহমেদ, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, সেলিম উদ্দিন এবং মাহজাবিন খালেদ।কমিটির আগের বৈঠকেই এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের জন্য মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান কমিটির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণসহ সামগ্রিক বিষয়ে বর্তমান সরকারের নীতি ও অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে দূতাবাসগুলোর ভূমিকা পর্যালোচনা হবে এই সম্মেলনে। এসব ক্ষেত্রে কোথাও কোনও দূর্বলতা থাকলে তা চিহ্নিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাদেওয়া হবে।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১২-১৩ সালে প্রথম এই ধরনের সম্মেলনের চিন্তা করা হলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে কূটনীতিকদের নিয়ে এ ধরনের সম্মেলন প্রায়ই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচেছ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনকে ঘিরে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে। নভেম্বর মাসের ৭, ৮ ও ৯ তারিখে অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে ১০টি অধিবেশন থাকবে। তবে সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি, একাধিক স্থান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান যাতে বিশ্ববাসীর কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়, সেজন্য এই সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে। এর আগে তার (ফারুক খান) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল চীন সফর করে আসবেন বলেও জানান তিনি।
বৈঠক সূত্র জানায়, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যসহ পুরো কর্মসূচি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরাসহ নারীর ক্ষমতায়ন, জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিটি ১৯৭১ সালের গণহত্যা বিষয়ে তথ্যসূত্র উল্লেখপূর্বক সংক্ষিপ্ত পুস্তিকা ও ডকুমেন্টারি প্রস্তুত করে বিদেশে প্রতিটি বাংলাদেশ মিশনে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
