বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ বিনিয়োগে ইরানে একটি ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, এ প্রকল্পে প্রয়োজনে দু’দেশের পাশাপাশি তৃতীয় অংশীদার হিসেবে বিশ্বের কোনো খ্যাতনামা কোম্পানিকে যুক্ত করা যেতে পারে। তিনি এ কারখানা স্থাপনে ইরানের চাবাহার সমুদ্র বন্দরের নিকটবর্তী শিল্প অঞ্চলে জমি বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনার জন্য ইরান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ইরান সফররত শিল্পমন্ত্রী সোমবার ইস্পাহান প্রদেশের গভর্ণর জেনারেল রাসূল জারগাপুর এর সাথে বৈঠককালে এ আগ্রহের কথা জানান। গভর্ণর জেনারেলের দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী ইরানের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং ইরানের জনগণের মধ্যে কৃষ্টি-সংস্কৃতি, খাদ্যাভাস, ধর্মীয় মূল্যবোধসহ অনেক ক্ষেত্রেই মিল রয়েছে। ১৯৯৭ সালে ইরানে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলন এবং ২০১২ সালের জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইরান সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। তিনি দু’দেশের শিল্পায়ন ও বিনিয়োগে সরকারি ও বেসরকারিখাতের অংশীদারিত্ব বাড়িয়ে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে উদারনীতি গ্রহণ করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্পেশাল ইনসেনটিভ প্রদানের পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইরানের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বাংলাদেশের সার কারখানারগুলোর জন্য অ্যামোনিয়া গ্যাস পরিবহন করতে ইরান থেকে রেলওয়ে ওয়াগন আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইস্পাহানের গভর্ণর জেনারেল বাংলাদেশের সাথে ইরানের ঐতিহাসিক বাণিজ্য সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বার্থে এ সম্পর্ক আরো জোরদার করতে হবে। তিনি জ্বালানি, পেট্রো-কেমিক্যাল, শিল্প, সংস্কৃতি, শিক্ষা, পরিবহন ও যোগাযোগখাতে ইরানের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজে লাগবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন। ইরানে দ্বিপাক্ষিক কিংবা ত্রিপাক্ষিক উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের প্রস্তাবকে তিনি স্বাগত জানান। এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইরানের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
