পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন,কিছুদিনের মধ্যেই দেশের জঙ্গিদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করা যাবে।শনিবার রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শনিবার সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশ হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই সমাবেশ হয়। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অধ্যক্ষ সুফিয়া খাতুনসহ শিক্ষক শির্ক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বিস্তার লাভ করতে দিবো না।এজন্য আমাদের জঙ্গিবাদ বিরোধী চেতনাবোধকে জাগাতে হবে। যদিও ইতিমধ্যে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিররুদ্ধ মানুষ জেগে ওঠেছে। কারণ এদেশের মানুষ উগ্রবাদ পছন্দ করে না।তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। ধ্বংসযজ্ঞে বিশ্বাস করে না। এরপরও ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধর্মের শর্টকার্ট বিকৃত ব্যাখা দিয়ে তরুণ সমাজকে টার্গেট করছে। কারণ, তারা জানে তরুণ সমাজ একদিন এদেশের উন্নয়নের হাল ধরবে। তরুণ সমাজকে ধ্বংস করলে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন রুদ্ধ হবে।এজন্য তরুণ সমাজকে ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিকৃত ব্যাখা থেকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ধর্মের কু-ব্যাখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টায় কিছু মানুষ হত্যাকান্ডে মেতেছে। তারা বলছে, ইসলাম কায়েম করছে। আসলে জঙ্গিবাদ রাজনৈতিক চক্রান্ত। এ চক্রান্ত আমরা অনেকটাই মোকাবেলা করেছি। আর এটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের জাগরণের ফলে।এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের স্থান নেই। জঙ্গিরা এত কমসংখ্যক যে এটা দমন করা গেছে। কিছুদিনের মধ্যে এটা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী। জঙ্গিবাদের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, জঙ্গিরা ধর্মের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য এই নরহত্যা করছে। এটা ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার, একটা ক্ষমতা দখলের চক্রান্ত। এ ধরনের ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন গুলশান হামলার প্রসঙ্গ টেনে সেখানে বন্ধুদের জন্য নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জঙ্গিরা তাকে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু বন্ধুদের রেখে সে চলে আসতে চায়নি। সে কত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাই বাংলাদেশের প্রাণের শক্তি। উপস্থিত ছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা এই শক্তিকে লালন করবে। সম্মিলিত প্রয়াসেই দেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের উদ্যোগে টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
অন্যদিকে, ইডেন কলেজের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন অর রশিদ।কলেজের অধ্যক্ষ গায়ত্রী চ্যাটার্জির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান। এই সমাবেশে কয়েক হাজার ছাত্রী অংশ নেন।
