বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়ার পরও নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে সাদা পোশাকের পুলিশ’।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটু আগে আমি খবর পেলাম, আমাদের উত্তরার তুরাগ থানার সভাপতি-সম্পাদক বুধবার হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় পথে সাদা পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে, এখনো তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এটা অহরহ ঘটছে এখন। আমি খুব স্পষ্ট করে সরকারকে বলতে চাই যে, অবিলম্বে এদের ফিরিয়ে দেন তাদের পরিবারের কাছে, অবিলম্বে এদের মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে সেই তরঙ্গ কিন্তু আপনাদের টিকিয়ে রাখতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে বন্দী, আমাদের তরুণ সম্ভাবনাময় নেতা তিনি নির্যাতিত হয়ে মিথ্যা মামলায় বিদেশে অবস্থান করছেন। আমাদের লাখ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ৩৫ লাখের ওপরে, গুম হয়ে গেছেন আমাদের প্রায় পাঁচ শর ওপরে নেতাকর্মী এবং নিহত হয়েছেন সহস্রাধিক এবং গত কয়েক দিন আবারো গুম হয়েছেন তিন/চারজন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত বুধবার বেলা ১টার দিকে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পর সাদা পোশাকে পুলিশ তুরাগ থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মামুন পারভেজ তন্ময় ও সহসভাপতি তৌহিদুল ইসলাম হাসিবকে তুলে নিয়ে যায়। উত্তরার পশ্চিম থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস মজুমদার মাসুমকে গত বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টর থেকে ধরে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের সদস্যরা, পল্টন থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক লিয়ন হককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এদের কাউকে এখনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘এখন দেশে প্রকৃতপক্ষে কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না। এই সময়ে সুশাসন দূরের কথা এখানে শাসন বলতে কিছু নেই। প্রতিদিন পত্র-পত্রিকার ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দুর্নীতির খবর আসছে। ভয়াবহ দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে কোনো খেয়াল নেই, দুই-একটা চুনোপুঁটিদের ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়।
১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তারেক রহমান।
তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদের নেতার জন্মদিনে কোনো উৎসব পালন করতে পারছি না। তার এই জন্মদিনে আমরা কেক কাটব না।’
ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ও এম সাব্বির আহমেদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির বিশেষ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, এনামুল হক চৌধুরী, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, ছাত্রদলের নাজমুল হাসান, মিজানুর রহমান শরীফ প্রমুখ।
