করোনাভাইরাসে কাঁপছে চীন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের আক্রমণে চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। এবার এ ভাইরাসে আরও এক চিকিৎসকের মৃত্যু হলো, যিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে টানা ৩৩ দিন ডিউটি করে তার কর্মক্ষেত্রে ‘বীর’ চিকিৎসক হিসেবে পরিচিতি পান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল চীনের সরকারি সংবাদসংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে জানায়, ঝং জিনজিং (৩২) নামে এক চিকিৎসক টানা ৩৩ দিন ডিউটি করে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। গত শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
করোনাভাইরাসে টানা চিকিৎসা দেওয়া এ চিকিৎসকের ছয় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে।ঝং জিনজিং চীনের দক্ষিণাঞ্চলের গুয়াংশি প্রদেশের লিংফেং শহরের একটি ক্লিনিকের উপ-পরিচালক ছিলেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লিংফেং টাউন ক্লিনিকের মেডিকেল কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত টিমের উপপ্রধানও ছিলেন ওই চিকিৎসক। গত ২৬ জানুয়ারি থেকে কোনো ধরনের ছুটি নেওয়া ছাড়াই টানা চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন তিনি।
ঝং জিনজিং ক্লিনিকের বাইরেও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, হুবেই প্রদেশ ফেরত বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টাইন পরিস্থিতির তত্ত্বাবধান, মহাসড়কের যাত্রী এবং গাড়ির চালকদের শরীরের তাপমাত্রাও পরীক্ষা করতেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তিনি তার সহকর্মীদের সঙ্গে মানুষজন যখন কর্মস্থলে ফিরবেন তখন করোনাভাইরাসের লাগাম কীভাবে টানা যায়, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। বৈঠক শেষে ডরমেটরিতে ফেরার পরপরই হঠাৎ লুটিয়ে পড়েন ঝং জিনজিং। একটু পড়েই তার মৃত্যু হয়।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসাসেবায় বীরোচিত অবদানের জন্য ঝং জিনজিংয়ের পরিবারকে ৮ লাখ ১৮ হাজার ইউয়ান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় সরকারের মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যুরো বিভাগ।
এদিকে, গত রোববার হুবেই প্রদেশের উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালে কর্মরত ৫৫ বছর বয়সী চিকিৎসক জিয়াং জুয়েকিং মারা যান। তিনিও অতিরিক্ত ডিউটি পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারান। এই ভাইরাসের চিকিৎসা দিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ চিকিৎসকের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ১২ জন চিকিৎসা দিতে গিয়ে রোগীদের দ্বারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।