গাজীপুরে কলেজ ছাত্র আলমগীর হোসেনকে হত্যার দায়ে তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভুঁইয়া বুধবার মামলার এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মুন্সেফপুর তুমুলিয়া গ্রামের চান মিয়ার ছেলে সোহেল (৩৭), তুমুলিয়া গ্রামের কফিল শেখের ছেলে জাকির (৩৯) ও একই গ্রামের মিন্নত আলী ওরফে মিনার ছেলে আলামিন (৩৯)। রায় ঘোষণাকালে আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিল।
গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো. আতাউর রহমান জানান, নরসিংদীর পলাশ থানার ঘোড়াশাল চরপাড়া এলাকার মো: আব্দুল বারেকের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৫) পার্শ্ববর্তী গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মুন্সেফপুর তুমুলিয়া গ্রামে থেকে লেখাপড়া করতো। সে ২০০২সালে কালীগঞ্জ শ্রমিক ডিগ্রী কলেজ হতে ডিগ্রী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি সে প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলামের সন্তানদের প্রাইভেট পড়াতো এবং নিয়মিত আসা যাওয়া করতো। এতে ওই প্রতিবেশীর স্ত্রী ভাবী লিপি বেগমের সঙ্গে আলমগীরের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সোহেল, জাকির ও সোহেলসহ স্থানীয় বখাটেরা আলমগীরকে ওই বাড়িতে যেতে নিষেধ করে হুমকি দিয়ে আসছিল। এঘটনার পর ২০০২ সালের ৭ অক্টোবর প্রাইভেট পড়ানো শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আলমগীর প্রতিবেশী ওই ভাবীর বাসায় টিভি দেখছিল। এসময় সোহেল, জাকির ও সোহেল দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে ওই বাসায় যায়। তারা তাদের সহযোগিদের সহায়তায় ঘরে ঢুকে আলমগীরকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে বাড়ির লোকজনের ডাকচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে আলমগীরকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলমগীর মারা যায়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা আব্দুল বারেক বাদী হয়ে সোহেল, জাকির ও সোহেলকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ গত ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই তিন আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এমামলায় ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন ও দীর্ঘ শুনানী শেষে বুধবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় পাঁচ আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাস্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি আতাউর রহমান খান এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট হুমাইয়ুন কবির ও আব্দুর রশিদ।
